প্রতিষ্ঠানের হিসাবের বই নির্ভুল ও স্বচ্ছ হওয়া অত্যাবশ্যক। এই হিসাবের ভিত্তিতেই প্রতিষ্ঠানের আর্থিক ফলাফল ও সার্বিক আর্থিক অবস্থা নিরূপণ করা হয়। হিসাববিজ্ঞানের মুখ্য এই উদ্দেশ্য অর্জনে জাবেদা কীভাবে সহায়ক ভূমিকা পালন করে, তা সংক্ষেপে বর্ণনা করা হলো—
লেনদেন লিপিবদ্ধকরণ : প্রতিষ্ঠানে অসংখ্য লেনদেন সংঘঠিত হয়। এই লেনদেন সংঘঠিত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে খতিয়ানে লিপিবদ্ধ করা সম্ভব না-ও হতে পারে। জাবেদায় লেনদেন লিপিবদ্ধ থাকলে পরবর্তীতে খতিয়ানে অন্তর্ভুক্তকরণে কোনো অসুবিধা হয় না ৷
লেনদেনের মোট সংখ্যা ও পরিমাণ জানা : খতিয়ান হতে নির্দিষ্ট দিনে, সপ্তাহে বা মাসে কয়টি লেনদেন সংঘঠিত হয়েছে তা জানা সম্ভব নয়। জাবেদায় লেনদেন তারিখের ক্রমানুসারে লিখা হয় বলে নির্দিষ্ট তারিখে, সপ্তাহে বা মাসে মোট কয়টি লেনদেন ঘটেছে তা সহজেই জানা যায়। মোট কত টাকার লেনদেন বিভিন্ন সময়ে হয়েছে, তা-ও জাবেদা থেকে জানা সম্ভব।
দ্বৈত সত্তার প্রয়োগ নিশ্চিত : দুতরফা দাখিলা পদ্ধতি অনুযায়ী লেনদেন সংশ্লিষ্ট ডেবিট ও ক্রেডিট পক্ষ একত্রে জাবেদায় লিখা হয়। ফলে জাবেদা হতে দ্বৈত সত্তার প্রয়োগ সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া যায় ।
লেনদেনের ব্যাখ্যা : লেনদেন সম্পর্কিত কোন সন্দেহ বা প্রশ্ন দেখা দিলে জাবেদা হতে তার ব্যাখ্যা পাওয়া সম্ভব। কারণ জাবেদা বইতে লেনদেন লিপিবদ্ধের পাশাপাশি লেনদেন সংঘটিত হওয়ার কারণ ও ব্যাখ্যা উল্লেখ করা হয়।
ভুল-ত্রুটি হ্রাস : লেনদেন খতিয়ানে অন্তর্ভুক্তির পূর্বে জাবেদায় লিখা হলে হিসাবে ভুল ত্রুটি ও খতিয়ানে বাদ পড়ার সম্ভাবনা হ্রাস পায় ৷
ভবিষ্যৎ সূত্র : জাবেদায় লেনদেনসমূহকে তারিখের ক্রমানুসারে সুশৃঙ্খলভাবে সাজিয়ে লিখে রাখা হয়। ভবিষ্যৎ যেকোনো প্রয়োজনে জাবেদা দলিল / প্রমাণস্বরূপ ব্যবহার করা যায়।
পাকা বহির সহায়ক : জাবেদা খতিয়ানের সহায়ক বইস্বরূপ কাজ করে বিধায়, খতিয়ান প্রস্তুত সহজ,পরিচ্ছন্ন ও নির্ভুল হয়।
তারিখ : এই কলামে লেনদেন সংঘটিত হওয়ার তারিখ অর্থাৎ বছর, মাস ও দিন সহকারে উল্লেখ থাকবে । অবশ্যই লেনদেন সংঘটিত হওয়ার ধারাবাহিকতা রক্ষা করেই জাবেদা প্রদান করতে হবে।
বিবরণ : এই কলামে লেনদেনের সঙ্গে জড়িত ডেবিট ও ক্রেডিট পক্ষ / হিসাব উল্লেখ করা হয়। সর্বদা ডেবিট পক্ষ প্রথম এবং ক্রেডিট পক্ষ দ্বিতীয় লাইনে লিখা হয়। পাশাপাশি অল্প কথায় লেনদেনটি ব্যাখ্যাও করা হয়।
খতিয়ান পৃষ্ঠা (খ: পৃ:) : লেনদেন সংশ্লিষ্ট ডেবিট ও ক্রেডিট হিসাব খতিয়ানের যে পৃষ্ঠায় পরবর্তীতে স্থায়ীভাবে লেখা হবে, তার পৃষ্ঠা নম্বর লেখা হয়। যাতে করে সহজেই লেনদেনটি খতিয়ান হতে বের করা যায় ৷
ডেবিট ও ক্রেডিট : ডেবিট হিসাবের ও ক্রেডিট হিসাবের টাকার পরিমাণ ডেবিট ও ক্রেডিট পক্ষের বরাবরে যথাক্রমে ডেবিট ও ক্রেডিট কলামে লিখা হবে। অবশ্যই উভয় কলামে টাকার পরিমাণ সমান হতে হবে। প্রতিটি জাবেদা লিখন সম্পন্ন করার পর বিবরণের ঘরে একটি রেখা টানতে হয়।
আরও দেখুন...